ভোজ্য তেলের বাড়তি চাহিদা পূরনে সূর্যমূখী হাইসান-৩৬ এর ভূমিকা শীর্ষক মাঠ দিবস পালিত হয়েছে।
আজ বিকেলে সুবিদখালী রানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বাজারজাত কৃত হাইব্রিড সূর্যমূখী বীজ হাইসান এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।
মাঠ দিবসে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ শওকত ওসমান, বরিশাল এসিআই সীড বিজনেস ডাইরেক্টর সুধীর চন্দ্র নাথ, এ্যডভান্টা সীড ইন্টারন্যাশনাল কান্ট্রি ম্যানেজার ডঃ এ বি এম জিয়াউর রহমান, পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি অফিসার মো: আরাফাত হোসেন প্রমুখ।
সুবিদখালীর স্থানীয় কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, সূর্য্যমূখী একটি স্বাস্থ সম্মত তেল ফসল। ADVANTA seed উদ্ভাবিত এবং এসিআই সীড কর্তৃক আমদানি ও বাজারজাতকৃত হাইব্রীড সূর্যমূখী হাইসান ৩৬ চাষ করে তিনি সফল হয়েছেন। গাছ ও ফলন দেখে কৃষক আব্দুস সালম সহ আশে পাশের সকল কৃষক ব্যাপক খুশি হয়েছে। স্থানীয় ভাবেও কিছুদিন থেকে এই সূর্যমূখীর তেল ভোজ্য তেল হিসাবে ব্যাবহার হয়ে আসছে।
রানীপুর গ্রামের সূর্যমুখী চাষী জেসমিন আক্তার বলেন, এর আগে কখনোই সূর্যমূখীর চাষ করিনি। কৃষি অফিসের সহযোগীতায় এই গ্রামের অনেক কৃষক জমিতে এই ফুলের চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলনের আশা করছি। কৃষি অফিস থেকে বীজ সারসহ বিভিন্ন রোগ ও পোকা দমনে পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করেছে। আমাকে দেখে এলাকার অনেক নারী সূর্যমূখী চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। অপর এক চাষি বেল্লাল মুন্সি জানান, এবছর ৩০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন তিনি। খরচ হয়েছে ৫ হাজার ২০০ টাকা। ফলনও ভাল হয়েছে। এটি খুবই লাভজনক ফসল। সূর্যমুখী চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ভোজ্য তেলের দাম বেশি হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে মানুষের ঝোঁক বেড়েেেছ। ফলন ভালো হলে আগামীতে ব্যাপকভাবে সূর্যমুখী চাষ করবো।
কৃষকরা বলেন, হাইব্রীড সূর্যমূখী হাইসান ৩৬ একটি স্বল্পমেয়াদী ক্ষরা ও লবনাক্ততা সহনশীল তেল ফসল। জীবন কাল ১০০-১১০ দিন এবং তেলের পরিমান ৪৬ – ৪৮ শতাংশ।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, প্রথমে উচ্চবিত্তরা এর ভোক্তা হলেও বর্তমানে স্বাস্থ্য-সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্তদের মধ্যেও এ তেলের ব্যবহার বাড়ছে। এদেশে সূর্যমুখী তেলের চহিদা পূরণ করতে আমদানি করতে হচ্ছে। বাজারে সূর্যমুখী তেলের সরবরাহ কম থাকায় অন্যান্য তেল বেশী ব্যবহার করতে হচ্ছে। বাজারে সরবরাহ থাকলে এ তেলের ব্যবহার ব্যাপকহারে বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকে। এদিক বিবেচনায় কৃষিবান্ধব সরকার সূর্যমুখী চাষের প্রতি অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে পটুয়াখালী জেলায় গত বছরের তুলনায় ২ গুণেরও বেশি জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়েছে।
বরিশাল এসিআই সীড বিজনেস ডাইরেক্টর সুধীর চন্দ্র নাথ বলেন, প্রথমে উচ্চবিত্তরা এর ভোক্তা হলেও বর্তমানে স্বাস্থ্য-সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্তদের মধ্যেও এ তেলের ব্যবহার বাড়ছে। এদেশে সূর্যমুখী তেলের চহিদা পূরণ করতে আমদানি করতে হচ্ছে। বাজারে সূর্যমুখী তেলের সরবরাহ কম থাকায় অন্যান্য তেল বেশী ব্যবহার করতে হচ্ছে। বাজারে সরবরাহ থাকলে এ তেলের ব্যবহার ব্যাপকহারে বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকে। এদিক বিবেচনায় কৃষিবান্ধব সরকার সূর্যমুখী চাষের প্রতি অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ শওকত ওসমান বলেন, সূর্যমুখী তেল হৃদরোগীদের জন্য খুব উপকারী। এ ছাড়া সূর্যমুখী তেল মানুষের রক্তের কোলেস্টোরল ও উচ্চ রক্ত চাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রচুর পরিমাণ প্রাণশক্তি থাকায় সূর্যমুখী বীজের তেল আমাদের শরীরের দুর্বলতা কাটাতে অত্যন্ত কার্যকর। এক গবেষণায় দেখা গেছে রান্নার জন্য অন্যসকল তেলের চাইতে সূর্যমুখীর তেল প্রায় দশগুণ বেশী পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। স্বাস্থ্য সচেতনা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইদানিং ভোজ্য তেল হিসেবে সূর্যমুখী ক্রমেই বাংলাদেশে জনপ্রিয় হচ্ছে।
এসময় কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তাগন কৃষকের বিভিন্ন সূর্যমূখীর মাঠ পরিদর্শন করেন এবং এসিআই এর হাইব্রীড সূর্যমুখী বীজ হাইসান ৩৬ এর ফলনে সন্তুষ্ট হয়ে স্থানীয় কৃষকদের আগামী দিনে চাষ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। অনুষ্ঠান শেষে সফল কৃষক আব্দুস সালাম কে এসিআই সীডের পক্ষথেকে পুরষ্কৃত করা হয়।